বাংলাদেশ বিশ্বের দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। আমাদের দেশের অর্থনীতি কৃষি নির্ভর হলেও বর্তমানে তা শিল্প ও সেবা নির্ভরে রুপান্তর হচ্ছে। দেশের মোট কর্মসংস্থানের ৮৫.১% অনানুষ্ঠানিক খাতে সম্পৃক্ত। অনানুষ্ঠানিক খাত বাংলাদেশের অর্থনীতির টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রে চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করছে এবং বেকারদের কর্মসংস্থান তৈরিতে ভূমিকা রাখছে।
পিকেএসএফ ও বিশ্বব্যাংক এর যৌথ সহযোগিতায় স্থায়ীত্বশীল উন্নয়নের জন্য সংগঠন ইয়ং পাওয়ার ইন সোশ্যাল এ্যাকশন (ইপসা) চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায় রেইজ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) কক্সবাজার সদরের আওতায় স্থায়ীত্বশীল উন্নয়নের জন্য সংগঠন ইপস ‘র উদ্যোগে খুরুশকুল ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গনে “কমিউনিটি আউটরিচ প্রোগ্রাম” আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইপসা কক্সবাজার এরিয়ার সম্মানিত এরিয়া ম্যানেজার খোকন চাকমা। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুরুশকুল ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অর্চনা প্রভা দে।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান প্রদান করেন রাফিউজ্জামান; লাইফস্কিল এন্ড এন্টারপ্রেনরশিপ ডেভেলাপমেন্ট অফিসার। রেইজ প্রকল্প সম্পর্কে তথ্য প্রদান করেন মোস্তাক আহমদ; প্রকল্প সমন্বয়কারী-রেইজ।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে ইপসা’কে ধন্যবাদ জানান এলাকার যুব সমাজের দক্ষতা উন্নয়নে সুন্দর একটি প্রকল্প খুরুশকুল ইউনিয়নে বাস্তবায়ন করার জন্য। তিনি বলেন, এতদিন মানুষ এনজিও থেকে কেবল লোন গ্রহণ করেছে। টাকা নিয়ে ব্যবসার চালিয়ে যাচ্ছে ঠিক কিন্তু তাদের দক্ষতা উন্নয়ন হচ্ছে না। বিপদকালীন সময়ে ব্যবসা কিভাবে সুরক্ষিত করছে তা জানছে না। ফলে বড় কোন দুর্যোগ এর শিকার হয়ে অনেক ব্যবসায়ী ব্যবসা’ই গুটিয়ে ফেলছে। করোনা মহামরীর পরে দেখা গিয়েছে অনেক ব্যবসায়ী ব্যবসা বন্ধ করে দিয়ে সর্বস্ব হারিয়ে বেকার হয়েছে। ইপসা রেইজ প্রকল্পের মাধ্যমে তরুন উদ্যোক্তাদের লোন প্রদানের পাশাপাশি তাদের দক্ষতা উন্নয়নে ১৬ দিনের প্রশিক্ষণ প্রদান করবে। বিষয়টি অত্যন্ত আনন্দদায়ক ও গুরুত্বপূর্ণ।
দ্বিতীয় যে বিষয়টি খুরুশকুল ইউনিয়ন বাসীর জন্য সুখকর সেটা হচ্ছে, রেইজ প্রকল্পের আওতায় বেকার যুবক-যুবতীদের ৬ মাস ব্যাপী দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। বর্তমানে উচ্চ শিক্ষিত অনেক যুবক যুবতী বেকার বসে আছে। চাকুরীর বাজার সংকুচিত হয়ে গিয়েছে। আর যারা স্বল্প শিক্ষিত তাদের দূর্ভোগের কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। স্বল্প শিক্ষিত বেকার যুবক যুবতীরা কারিগরি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে যাতে স্বাবলম্বী হয়ে নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে তার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে ইপসা। যে কাজ সমাজের একজন দায়িত্বশীল মানুষ হিসেবে জনপ্রতিধিদের করার কথা ছিলো ইপসা সেই কাজ করেছে। এ জন্য ইপসা’কে ধন্যবাদ। তিনি উপস্থিত সকলকে রেইজ প্রকল্পের সুবিধা সমূহ গ্রহণ করার আহবান জানান। তিনি আরও বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে যে কোন সহযোগিতা ইউনিয়ন পরিষদ এর পক্ষ হতে প্রদান করা হবে।
সভাপতি তার সমাপনী বক্তব্যে উপস্থিত সকলকে অনুষ্ঠানকে সাফল করার জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি আরও বলেন ইপসা যুব সমাজের জন্য অতীতের মতো ভবিষ্যতেও নানা কার্যক্রম নিয়ে এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশ সরকারের একটি উন্নয়ন সহযোগি প্রতিষ্ঠান হিসেবে সমাজে বেকার সমস্যা সমাধানে ইপসা সচেষ্ট। তারই ধারাবাহিকতায় পিকেএসএফ ও বিশ্ব ব্যাংক এর সহযোগিতায় “রেইজ” প্রকল্প কক্সবাজার জেলায় বাস্তবায়ন করছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, মোহাম্মদ শহীদুজ্জামান; শাখা ব্যবস্থাপক, মোস্তাফিজুর রহমান; সহকারী শাখা ব্যবস্থাপক ইপসা-বঙ্গবন্ধু শাখা সহ অন্যান্যরা।
পাঠকের মতামত